মাওবাদী হানায় নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া সহ ১০ দফা
দাবিতে ফের আন্দোলনে নামলেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। গত সোমবার ২৯/১০/২০১৮ ঝাড়গ্রাম
শহরের পাঁচমাথা মোড়ে ও জেলাশাসকের অফিসের সামনে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করেন।
তাঁদের দাবি,
যারা বন্দুক ধরেছে, তারা চাকরি
পেয়েছে। আর যারা খুন হল,
তাদের পরিবারের কেউ চাকরি পেল না। মাওবাদী হানায় নিহত ও
নিখোঁজ পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের মৃত ঘোষণা করতে হবে। এই
দাবিতে এদিন খালি থালা হাতে ঝাড়গ্রাম শহরে মিছিল ও পাঁচমাথা মোড়ে পথ অবরোধও করেন
তাঁরা। অবরোধের পর জেলাশাসকের অফিস যাওয়ার পথে পুলিসের প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দেন
তাঁরা। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার সময় মহিলাদের সঙ্গে পুলিসের ধস্তাধস্তি হয়। পরে
জেলাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
এদিন সকালে শহরে হাতে প্ল্যাকার্ড ও ফ্লেক্স ও ফেস্টুন নিয়ে মিছিল শুরু হয়। ওই
মিছিলে নিহত ও নিখোঁজ পরিবারের কয়েকশো সদস্য ছিলেন। তবে অধিকাংশই ছিলেন মহিলারা।
অনেক মহিলা সাদা শাড়ি পরে মিছিলে হাঁটেন। পাঁচমাথা মোড়ে ২০ মিনিট পথ অবরোধ করেন।
সেখানে মহিলারা খালি থালা নিয়ে বসে পড়েন। একটি স্মরণসভাও হয়। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়
অবরোধের জেরে যানজট তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত,
ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে তাঁরা শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারের যৌথমঞ্চ
গঠন করেছেন। জানা গিয়েছে,
ঝাড়গ্রাম জেলায় মাওবাদীদের হাতে ৪১৫ জন নিহত হয়েছেন। ৭৮ জন
নিখোঁজ রয়েছেন। প্রায় ১০০ জন আহত রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মাওবাদীদের হাতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে।
কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই কিছু পাননি। অথচ যেসব মাওবাদী খুন করেছে, তারা এখন চাকরি পেয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে। গত জুন মাসে ঝাড়গ্রামে মিছিল করে এই
মঞ্চ জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি বলে
অভিযোগ।
শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারের যৌথমঞ্চের সম্পাদক শুভঙ্কর মণ্ডল বলেন, ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী বেলপাহাড়িতে জানিয়েছিলেন মাওবাদী হানায় যাঁরা মারা
গিয়েছেন,
তাঁদের পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি
পূরণ হয়নি। চাকরি না পেলে শেষ পর্যন্ত আমাদের বন্দুক ধরতে হবে। এক মাসের মধ্যে
সুরাহা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, আমরা সহানুভূতির
সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। আমরা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা
প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। নিখোঁজদের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু
হচ্ছে।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা, ৩০/১০/২০১৮।
No comments:
Post a Comment