ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে পুলিশের উদ্যোগে পাঁচ আদিবাসী পরিবারকে
বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার জন্য গ্রামে পৃথক ট্রান্সফর্মার বসাল বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
প্রায় পাঁচ-সাত বছর আগে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের কেন্দুগাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনারিমারা
গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছিল। গ্রামের অন্য ঘরে আলো জ্বললেও এতদিন আঁধারেই ছিল গ্রামের পাঁচ
আদিবাসী পরিবারগুলি। গ্রামের একপ্রান্তে ওই পাঁচ আদিবাসী পরিবারের বাস।
কিন্তু এ বার ওই পাঁচ আদিবাসী পরিবারের ঘরে আঁধার ঘুচল। স্থানীয় থানার সুপারিশে
বিদ্যুৎ বণ্টন দফতর ওই প্রান্তিক পাঁচ আদিবাসী পরিবারের জন্য পৃথক একটি ট্রান্সফর্মার
বসাল।
জঙ্গলমহলের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে পুলিশ-প্রশাসনকে একযোগে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার
নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওড়িশার সীমানা ঘেঁষা জঙ্গল
ঘেরা সোনারিমারা গ্রামের এই নয়া ট্রান্সফর্মার সেই সক্রিয়তার ফল। স্থানীয় পুলিশ সূত্রের
অবশ্য দাবি, বিষয়টি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অনেক আগে। চলতি বছরের জুলাইয়ে এলাকা
পরিদর্শনের সময় গোপীবল্লভপুর থানার আইসি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আসে সোনরিমারা
গ্রামের পাঁচটি আদিবাসী পরিবারে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ওই বাসিন্দারা জানান, অনেক
চেষ্টা করেও তাঁরা বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। কারণ, গ্রামের একপ্রান্তে থাকা ওই পাঁচটি পরিবারের
বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দিতে গেলে পৃথক একটি ট্রান্সফর্মার বসাতে হতো। সেই জটিলতায়
ওই পরিবার গুলিকে আঁধারে থাকতে হচ্ছে। অবশেষে আঁধার মু্ক্তি। গত রবিবার ০৯/১২/২০১৮
আনুষ্ঠানিক ভাবে ট্রান্সফর্মারটি চালু করেন গোপীবল্লভপুর থানার আইসি এবং বিদ্যুৎ বণ্টন
সংস্থার গোপীবল্লভপুরের স্টেশন ম্যানেজার অজয়কুমার। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ঝাড়গ্রামের
ডিভিশনাল ম্যানেজার উজ্জ্বল রায় বলেন, “ওই বাসিন্দারা আবেদনপত্র ও কোটেশন জমা দেওয়ার
সাতদিনের মধ্যে ট্রান্সফর্মার বসিয়ে তাঁদের বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।” একজন বাসিন্দার
সংযোগ নেওয়ার জন্য খরচ দেওয়ার সামর্থ ছিল না। ওই টাকা পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।
সোনারিমারা গ্রামে ৪৫ টি পরিবারের বাস। আদিবাসী অধ্যুষিত ওই গ্রামে বেশ কয়েক বছর
আগে বিদ্যুতের সংযোগ এলেও সুনীল সরেন, কুনারাম সরেন, মুচিরাম সরেন, কুমারচন্দ্র সরেনদের
বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। ওই পরিবারগুলি প্রান্তিক চাষি। এ ছাড়া জঙ্গলের শালপাতা ও কেন্দুপাতা
সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, গোপীবল্লভপুর থানার পক্ষ থেকে
স্থানীয় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু মাঝপথে বিদ্যুৎ বিভাগের
স্থানীয় আধিকারিক বদলি হয়ে যান। ফের গত অক্টোবরে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ৫টি পরিবারের
বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। আলো পেয়ে
খুশি সুনীলবাবু, কুনারামরা। তাঁরা বলছেন, “সাত বছর চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাইনি।
অবশেষে পুলিশ সাহেবকে জানানোর পরে বিদ্যুৎ পেলাম।”
সুত্র – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment