গত ১ জুন, ২০১৯ রাজস্থানের পালি জেলার ধানেরিয়া গ্রামে মন্দিরে
প্রবেশের চেষ্টা করায় এক দলিত কিশোরের হাত-পা বেঁধে নৃশংস ভাবে পেটানোর অভিযোগ
উঠল। ১ লা জুন ঘটনা ঘটলেও ব্যাপক হারে তা প্রচারে আসে গত ৩ জুন, ২০১৯ সোশ্যাল
মিডিয়ায় ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পর।
কিন্তু নির্যাতনের এখানেই শেষ হয়নি। এক নাবালিকার
শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই কিশোরকেই আটক করে জুভেনাইল হোমে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের যুক্তি,
ওই নাবালকের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেছেন
তারই এক কাকা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল
অফেন্সেস) আইনে তাকে আটক করে হোমে পাঠানো হয়েছে। উল্টে নিগ্রহকারীদের এক জনও ধরা
পড়েনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ওই
কিশোরের হাত ও পা একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাকে ঘিরে এক দল যুবক।
অনেকেরই গেরুয়া পোশাক। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাটিতে শুয়ে পড়া ওই কিশোরকে পেটানো শুরু
করল দু’-তিন জন। অসহায়ের মতো আর্তনাদ করে চলেছে ওই কিশোর।
সঙ্গে রাজস্থানী ভাষায় বারবার কিছু বলার চেষ্টা করছে। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী,
‘ভুল হয়ে গিয়েছে’, ‘আর কখনও হবে না’ — এই জাতীয় কথা বলছিল ওই কিশোর। কিন্তু সেসবের
তোয়াক্কা না করে বেধড়ক পেটাচ্ছে ওই যুবকরা।
কিন্তু পরের পর্ব আরও ভয়ঙ্কর! পুলিশ ওই কিশোরকেই আটক করে
নিয়ে যায়। নাবালক হওয়ায় পাঠিয়ে দেয় জুভেনাইল হোমে। অথচ অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম ও
টিভি চ্যানেল-সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করার
কারণেই ওই নাবালককে পেটায় অভিযুক্ত ওই যুবকরা।
স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের ভুমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। নাবালিকার
শ্লীলতাহানির অভিযোগে কিশোরকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ। কিন্তু যারা ওই কিশোরকে এ
ভাবে হাত-পা বেঁধে নৃশংস ভাবে পেটাল, এবং সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার
পরও কেন পুলিশ তাদের গ্রেফতার করল না, তা নিয়ে সরব স্থানীয়
বাসিন্দারা।
সংবাদ সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ৫ জুন, ২০১৯।
No comments:
Post a Comment