Tuesday, July 27, 2021

 ভাতারে আদিবাসী শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক অভিযুক্ত পড়শি যুবক।

 

এক আদিবাসী শিশুকন্যাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল পড়শি এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত রবিবার (১৮/০৭/২০২১) রাতে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেন এলাকার লোকজন। সোমবার ভোরে ওই যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে এই ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাড়ে ছবছরের ওই আদিবাসী মেয়েটির বাড়ি ভাতারের খেরুর গ্রামে। তার মা-বাবা দুজনেই জনমজুরির কাজ করেন। তাঁদের আরও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে।

নাবালিকার পরিবার জানিয়েছে, রবিবার রাতে মেয়েদের ঘুম পাড়িয়ে এলাকার এক গৃহস্থের বাড়িতে মজুরির টাকা চাইতে গিয়েছিলেন শিশুটির মা। ঘটনার সময় বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন মেয়েটির বাবা। অভিযোগ, ওই ঘুমন্ত শিশুটিকে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় তীর্থ বাগ ওরফে লাদেন নামে এলাকার এক যুবক। এর পর শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী খাল পাড়ের একটি সাবমার্সিবল পাম্পের কাছে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে লাদেন বলে অভিযোগ।

শিশুটির মা মজুরির টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরে তাঁর মেয়েকে দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরিবারের দাবি, সারা গায়ে কাদামাখা এবং প্রচণ্ড অসুস্থ অবস্থায় রবিবার রাত প্রায় ১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে শিশুটি। এর পর সে জানায়, খালপাড়ে একটি সাবমার্সিবল পাম্পের কাছে নিয়ে গিয়ে তার উপর অকথ্য অত্যাচার করেছে তীর্থ।

ঘটনার কথা শুনে তীর্থর খোঁজ শুরু হয়। সোমবার ভোরে অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পর সোমবার সকালে পুলিশ গ্রামে গিয়ে আটক করে আনে ২২ বছরের অভিযুক্তকে। শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় পর ভাতার থানায় যান আদিবাসী সংগঠনের কর্মকর্তারা। তীর্থর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তথ্য সুত্র – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৯ জুলাই ২০২১।

Thursday, September 12, 2019

লোধা-শবরদের স্বনির্ভর করতে কৃষিখামার তৈরি করছে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন।


ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন আদিম আদিবাসী লোধা-শবরদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করতে লালগড় ব্লকের রাঙামেটিয়া এলাকায় ২৫ একর পতিত জমিতে গড়ে তুলছে কৃষিখামার। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, লালগড়ের রাঙামেটিয়া এলাকায় পাশাপাশি দুটি মৌজায় ২৫ একর জায়গাজুড়ে এই কৃষিখামার গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এই কৃষিখামারে অন্তত ৪০টি লোধা-শবর পরিবারকে যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও এলাকার বেকারদের এখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
রাঙামেটিয়ার চিহ্নিত ২৫ একর পতিত জমির মধ্যে অনেক লোধা-শবর পরিবারের পাট্টা রয়েছে। তবে পাট্টা থাকলেও অনেকের নামে রেকর্ড নেই। যেসব ব্যক্তির রেকর্ড নেই, তাঁদের নামে রেকর্ড করে দেবে প্রশাসন। এছাড়াও অনেককে পাট্টা দেওয়া হবে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি রাঙামেটিয়া গ্রামে গিয়ে লোধা-শবর বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। লোধা-শবরদের আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য লোধা-শবরদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা খুবই প্রয়োজন বলে মনে করেছে জেলা প্রশাসন। তাই কৃষিখামার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই কৃষিখামারের পরিকাঠামোর জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে।
জানা গিয়েছে, কৃষিখামারের মধ্যে থাকবে জলতীর্থ। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের পাশাপাশি এখানে মাছ চাষ করা হবে। এছাড়াও গোরু পালন, ছাগল ও হাঁস পালনের ব্যবস্থা এবং পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সব্জি ও ফলচাষ করা হবে। এজন্য লোধা-শবরদের ট্রেনিং দেওয়া হবে। ওই জায়গার মধ্যে ট্রেনিংরুম, গোডাউন, পশুপালনের জন্য শেড নির্মাণ করা হবে। সব্জি, মাছ চাষ ও পশুপালনের পর মার্কেটিংয়ের ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ৪০টি পরিবারের মানুষজন এই কৃষিখামারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবেন। এই পরিবারগুলিকে নিয়ে কো-অপারেটিভ সোসাইটি গঠন করা হবে। এছাড়াও বহু মানুষজনের এখানে কর্মসংস্থান হবে।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক বলেন, কর্মসংস্থান তৈরির জন্য এই কৃষিখামার গড়ে তোলা হবে। পতিত জমিতে চাষের ফলে তাঁদের আয় হবে। তাঁরা আর্থিকভাবে সমৃদ্ধও হবেন। আমরা এজন্য নিয়মিত নজরদারি চালাব। ওঁদের বিভিন্নভাবে সাহায্যও করা হবে।
লোধা-শবরদের স্বনির্ভর করতে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ লোধা শবর সমাজ সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মৃণাল কোটাল মহাশয়।

Sunday, August 25, 2019

পশ্চিমবাংলায় তফশিলী জাতি/উপজাতিদের জন্য কেন্দ্রীয় আশ্রম ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাস এর তালিকা।


(List of Central Ashram Hostels for SC/ST in West Bengal)

1.       বাবুরবাগ। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৭০। ঠিকানা – বাবুরবাগ, বর্ধমান।
2.       দুর্গাপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – আলিশা, বর্ধমান।
3.       নুতনচাটি। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – নতুনচাটি, বাঁকুড়া।
4.       খাতড়া। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – খাতড়া আদিবাসী কলেজ, মৌজা – মাকলারা, থানা – খাতড়া, বাঁকুড়া।
5.       রানীবাঁধ। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৭০। ঠিকানা – রানীবাঁধ হাইস্কুল, মৌজা – তালগোড়া, বাঁকুড়া।
6.       বড়গরি। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – পণ্ডিত রঘুনাথ মুরমু স্মৃতি মহাবিদ্যালয়, মৌজা – পাতাগাড়ি, বাঁকুড়া।
7.       গড়রাইপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – রাইপুর বাজার, বাঁকুড়া।
8.       গড়রাইপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৪০। ঠিকানা – গড়রাইপুর হাইস্কুল, বাঁকুড়া।
9.       নুতনচাটি। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – নতুনচাটি, বাঁকুড়া।
10.   সিউড়ি। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – কালিগাটিয়া স্মৃতি নারী শিক্ষা নিকেতন, মৌজা – আনন্দপুর, বীরভূম।
11.   নলহাটি। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – মৌজা – নলহাটি, বীরভূম।
12.   দেবীবাড়ি। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – দেবীবাড়ি, কোচবিহার শহর।
13.   মাথাভাঙ্গা। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬৯। ঠিকানা – মাথাভাঙ্গা হাইস্কুল, কোচবিহার।
14.   কালিম্পং। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – কালিম্পং, দার্জিলিং।
15.   কালিম্পং। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – কালিম্পং, দার্জিলিং।
16.   চম্পাসারি। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির, চম্পাসারি, দার্জিলিং।
17.   বালুরঘাট। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – বালুরঘাট মহিলা মহাবিদ্যালয়, দক্ষিণ দিনাজপুর।
18.   গঙ্গারামপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – গঙ্গারামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর।
19.   রায়গঞ্জ। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – কর্ণজোড়া, উত্তর দিনাজপুর।
20.   ফুলেশ্বর। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – ফুলেশ্বর পৌরসভা ১১ নম্বর ওয়ার্ড, থানা – উলুবেড়িয়া, হাওড়া।
21.   আরামবাগ। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – নেতাজী মহাবিদ্যালয়, আরামবাগ, হুগলী।
22.   গোঘাট। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – গোঘাট, হুগলী।
23.   আলিপুরদুয়ার। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি।
24.   আলিপুরদুয়ার। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – দেপ্রানপুর, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি।
25.   ধুপগুড়ি। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – সুকান্ত মহাবিদ্যালয়, উত্তর বড়গড়ি, ধুপগুরি, জলপাইগুড়ি।
26.   নাগরাকাটা। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – নাগরাকাটা হিন্দু হাইস্কুল, ভাগলপুর, থানা – নাগরাকাটা, জলপাইগুড়ি।
27.   মালবাজার। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – নিউ গ্লাঙ্কো টি ই, থানা – মালবাজার, জলপাইগুড়ি।
28.   ফালাকাটা। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – পারানযার পাড়া, থানা – ফালাকাটা, জলপাইগুড়ি।
29.   জলপাইগুড়ি শহর। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা - খাড়িয়া, জলপাইগুড়ি।
30.   জলপাইগুড়ি শহর। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা - খাড়িয়া, থানা – কোতওয়ালি, জলপাইগুড়ি।
31.   বিরপাড়া। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – বিরপাড়া টি জি, থানা – বিরপাড়া, জলপাইগুড়ি।
32.   উদয়ন। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্র আসন – ৯২। ঠিকানা – ৬১/১ ই, এন সি স্ট্রিট, কলকাতা-১২।
33.   সিধু-কানু। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্র আসন – ৬৪। ঠিকানা – পি-১০৮এ, বিধান নগর, কলকাতা-৪৭।
34.   সেন্ট ডেভিড। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্র আসন – ১৫৬। ঠিকানা – ৩৩/১, গোখানা লেন, কলকাতা-৯।
35.   ইংলিশবাজার। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – ইংলিশবাজার, মালদা।
36.   পাকুয়াহাট। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – নীরজাপুর, বামনগোলা, মালদা।
37.   চাঁচল। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – চাঁচল, মালদা।
38.   বেলপাহাড়ি। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৪৫। ঠিকানা – বেলপাহাড়ি আবাসিক সরকারি ছাত্রী বিদ্যালয়, ঝাড়গ্রাম।
39.   রানী শিরোমণি। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ১০০। ঠিকানা – মেদিনীপুর শহর, পশ্চিম মেদিনীপুর।
40.   মানিকপাড়া। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – মানিকপাড়া, ঝাড়গ্রাম।
41.   গোপীবল্লভপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম।
42.   নাড়াজোড়। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – দাসপুর-১ ব্লক, পশ্চিম মেদিনীপুর।
43.   ঝাড়গ্রাম। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৪৫। ঠিকানা – ঝাড়গ্রাম শহর, ঝাড়গ্রাম।
44.   বহরমপুর। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – খাগড়া, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ।
45.   বহরমপুর। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – মৌজা - গড়বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
46.   কৃষ্ণনগর। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৭০। ঠিকানা – জেলা শাসক বাংলো, কৃষ্ণনগর, নদীয়া।
47.   বগুলা। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – বগুলা, হাঁসখালি, নদীয়া।
48.   আরাংঘাটা। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – আরাংঘাটা, নদীয়া।
49.   পুরুলিয়া। তফশিলী উপজাতি ছাত্রী আসন – ৬৯। ঠিকানা – পুরুলিয়া বি এড কলেজ, পুরুলিয়া।
50.   রঘুনাথপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – রঘুনাথপুর কলেজ, পুরুলিয়া।
51.   মানবাজার। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মানবাজার, পুরুলিয়া।
52.   বলরামপুর। তফশিলী উপজাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – বলরামপুর, পুরুলিয়া।
53.   রানী রাসমণি। তফশিলী জাতি/উপজাতি ছাত্রী আসন – ৯৬। ঠিকানা – ২০, জজ কোর্ট রোড, আলিপুর, কলকাতা-২৭।
54.   ডায়মন্ড। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – মহাদেবপুর, থানা – ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ২৪ পরগণা।
55.   কাকদ্বীপ। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা।
56.   সাগর। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৬০। ঠিকানা – সাগর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা।
57.   টাকি। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – টাকি, থানা – হাসনাবাদ, উত্তর ২৪ পরগণা।
58.   বারাসাত। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৮০। ঠিকানা – মৌজা – উত্তর হাট, থানা – বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগণা।
59.   কালিনগর। তফশিলী জাতি ছাত্রী আসন – ৬০। ঠিকানা – কালিনগর, উত্তর ২৪ পরগণা।
60.   হেলেঞ্চা। তফশিলী জাতি ছাত্র আসন – জানা নেই। ঠিকানা – হেলেঞ্চা, উত্তর ২৪ পরগণা।

এছাড়াও বিস্তারিত জানার জন্য পশ্চিমবাংলা সরকারের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরে যোগাযোগ করতে পারেন বা দফতরের ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।

Saturday, August 24, 2019

১০ম “সাঁওতালি ও আঞ্চলিক সিনেমা উৎসব” ও তৃতীয় “আদিবাসী মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতা”।



সারা ভারত সাঁওতালি সিনেমা সমিতির উদ্যোগে আগামী ৮-১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ঝাড়খণ্ড রাজ্যের টাটা শহরের গোপাল ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ১০ম “সাঁওতালি ও আঞ্চলিক সিনেমা উৎসব”। সেইসঙ্গে ১৩-১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় “আদিবাসী মিস ইন্ডিয়া”। এই অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় আছেন টাটা কোম্পানি ও ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার।
সারা ভারত সাঁওতালি সিনেমা সমিতির সভাপতি রমেশ হাঁসদা জানিয়েছেন ৮ টি সাঁওতালি সিনেমা ও ৪ টি আঞ্চলিক সিনেমা সমেত মোট ১২ টি সিনেমা এই উৎসবে অংশগ্রহণ করবে। ২৫-৩০ আগস্ট, ২০১৯ এর মধ্যে সমস্ত সিনেমার জুরি স্ক্রীনিং সম্পন্ন হবে।
তৃতীয় আদিবাসী মিস ইণ্ডিয়া প্রতিযোগিতার জন্য ১৮ আগস্ট কলকাতা, ২৫ আগস্ট ভুবনেশ্বর ও ১২-১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ টাটা শহরের সোনারিতে সেমিফাইনেল এর আয়োজন করা হয়েছে।
এই অনুষ্ঠানের প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস মহাশয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা মহাশয় ও সাংসদ বিদ্যুৎ বরণ মাহাত।


Wednesday, August 7, 2019

সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সাহায্যকারী ঢেকারো সম্প্রদায়ের বর্তমানের করুণ কাহিনি।


ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাঁওতালদের সাহায্যকারী ঢেকারো সম্প্রদায়ের বর্তমানের করুণ কাহিনি

বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে এবং অন্যত্র ঢেকারো পদবি যুক্ত মানুষ জন বসবাস করেন। এই গোষ্ঠীর অনেকে নামের শেষে লোহারপদবিও লেখেন। ঢেকারো সমাজের এই সব মানুষজনকে আজও সমাজের একটা অংশ একটু অন্যদৃষ্টিতে দেখেন। পরাধীন ভারতে এই জনগোষ্ঠীকে অপরাধপ্রবণ শ্রেণি হিসেবে মনে করা হতো। ইতিহাসবিদদের একাংশ বলে থাকেন, ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাঁওতালদের সাহায্য করেছিলেন ঢেকারো সম্প্রদায়ের মানুষ। সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনের পরে ইংরেজ সরকার এদের বিতাড়ন আরম্ভ করে, রুটিরুজি কেড়ে নিতে শুরু করে, অপরাধী বলে ঘোষণা করে। এর পর থেকে অসামাজিক কিছু ঘটলেই এদের জেলে পাঠানো হতো। ব্রিটিশ পুলিশ সেই আমলে ঢেকারোদের উপরে নানা অত্যাচার চালিয়েছে। এই গোষ্ঠীর বহু নিরীহ মানুষকে অনেক সময় বিনা অপরাধে ব্রিটিশ পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছে। দীর্ঘদিন জেলে আটকে রেখে নির্মম অত্যাচার করায় অনেক ঢেকারোর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও পুলিশি অত্যাচার অব্যাহত থাকায় জনমানসে ক্রমে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে থাকে। ঢেকারো এবং সমগোত্রীয় কয়েকটি শ্রেণিকে অহেতুক অপরাধ-প্রবণ গোষ্ঠী রূপে যাতে দেখা না হয় এবং তাঁদের উপর হওয়া অত্যাচার ও শোষণ যাতে অবিলম্বে বন্ধ হয়, তার জন্য এ রাজ্য তথা দেশের বহু বিশিষ্ট মানুষ ও সমাজকর্মীরা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে থাকেন। তাঁদের সার্বিক কল্যাণের কথা ভাবতে থাকেন তাঁরা।
অবশেষে গড়ে তোলা হয় পশ্চিমবঙ্গ ঢেকারো সমাজ কল্যাণ সমিতি১৯৯৮ সালের ১৬ এপ্রিল লেখিকা ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবীর বিশেষ উদ্যোগে তাঁর বালিগঞ্জের বাড়িতে গঠিত হয় উক্ত সমিতি। প্রধান উপদেষ্টা হন মহাশ্বেতা দেবী। পেশায় শিক্ষক ও লেখক সুহাস দাসকে করা হয় উপদেষ্টা। সম্পাদকের দায়িত্ব পান বীরভূমের রাজনগরের সাহাবাদের বাসিন্দা তথা ঢেকারো সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি শিবদাস লোহার। সভাপতির পদে আসীন হন রাজনগরেরই কানমোড়ার বাসিন্দা ডোমন ঢেকারো। শিবদাসবাবু জানান, ১৯৯৮ সালের ৩০ অগস্ট আমদাবাদের ছারানগরে ভারতের বিভিন্ন বিমুক্ত যাযাবর জনজাতির প্রথম মহা সম্মেলন আয়োজিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। ছিলেন কর্মসূত্রে আমেরিকায় অধ্যাপিকা, লেখিকা, অনুবাদক, সমাজকর্মী ও বক্তা হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিপ্রাপ্ত গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পীভাক।
ওই সম্মেলনে থাকতে পারায় আজও নিজেকে ধন্য মনে করেন শিবদাসবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ঢেকারো সমাজের শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের অধিকাশই বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে ছিল। তাদের শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয় একাধিক শিক্ষাকেন্দ্র। গায়ত্রী চক্রবর্তীর আর্থিক সহায়তায় এগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে ভাল ভাবেই চলছে।’’ অতীতে একাধিক বার এমনকি গায়ত্রী দেবীর সঙ্গে সফর সঙ্গী হয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষাকেন্দ্র তথা স্কুলগুলি ঘুরে দেখার সুযোগ প্রতিবেদক মহম্মদ সফিউল আলমেরও হয়েছিল। আজও বছরে এক বা একাধিক বার সুদূর আমেরিকা থেকে ছুটে আসেন ওই মহিলা। খোঁজখবর নেন এই সব অবহেলিত শ্রেণির মানুষ ও তাঁদের বাড়ির শিশুদের। তাঁদের সার্বিক উন্নয়ন হোক এবং পড়ুয়ারা পড়াশোনা করে যথার্থ মানুষ হোক, তার জন্য তিনি সর্বদাই সচেষ্ট থাকেন। বিদেশে থেকে যা আয় করেন, তার একটা বড় অংশ গায়ত্রী দেবী ভারতে এসে মূলত বীরভূমের ঢেকারো, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেড়িয়া শবর, লোধা শবরদের জন্য ব্যয় করে থাকেন নিঃস্বার্থ ভাবে। অতীতে মহাশ্বেতা দেবীর আদর্শে ও কাজকর্মে অনুপ্রাণিত হয়ে গায়ত্রী দেবীর এই সমাজসেবায় নিজেকে সমর্পিত করা। ঢেকারো সমাজ কল্যাণ সমিতির সদস্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এবং দীর্ঘ কয়েক বছর এই সব সামাজিক কাজকর্মগুলি প্রত্যক্ষ করে অনেকখানি টের পাওয়া গিয়েছে।
ব্রিটিশ আমলে লৌহ আকরিক থেকে লৌহ নিষ্কাশন করে ও তার মাধ্যমে অস্ত্র তৈরি করে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সরবরাহ করতেন ঢেকারোরা। ফলস্বরূপ ব্রিটিশ সরকারের রোষ নজরে পড়েন তাঁরা। তাঁদের অস্ত্র তৈরির কামারশাল বা ছোট কারখানাগুলি ধ্বংস করে দেয় ব্রিটিশ পুলিশ। শুরু করে ধরপাকড়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও কেন এই জনজাতির মানুষজনকে পুলিশ-প্রশাসন অযথা হেনস্থা করবে, সেটাই প্রশ্ন অনেকের। অনেকে মনে করেন, এর শুরুটা সেই ব্রিটিশ আমলের তৈরি করা দুর্বৃত্ত আইন বা ক্রিমিনাল ট্রাইবস অ্যাক্ট। চুরি না করলেও ঢেকারোদের চোর, অপরাধ না করলেও তাঁদের অপরাধী তকমা দেওয়া হতো। পরে আইন ও আইনের বিভিন্ন ধারার রদবদল, সংযোজন, বিয়োজন ঘটলেও পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মানসিকতা আজও তেমন বদলায়নি বলে অভিযোগ। ফলে স্বাধীনতার এত বছর পরও এই শ্রেণির মানুষেরা অনেকখানি উপেক্ষিত অবহেলিত।
তবে মহাশ্বেতা দেবী ও তাঁদের মতো মানুষেরা এই শ্রেণির মানুষদের উপরে দশকের পর দশক চলতে থাকা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় এবং প্রশাসনিক স্তরে বারবার দরবার করায় কিছুটা হলেও মানসিকতায় বদল এসেছে। ঢেকারো  সমাজ কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজনগর গাংমুড়িতে সমিতির একটি অফিস করা হয়েছে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় মানুষেরা। আগে রানীগ্রামে অফিসটি ছিল। বর্তমানে গায়ত্রী দেবীর আর্থিক সহায়তায় চলা স্কুল বা শিক্ষাকেন্দ্রগুলি রাজনগর ব্লকের সাহাবাদ, টাবাডুমড়া, বেলেড়া, কানমোড়া, হরিপুর, সিউড়ির নাঙ্গুলিয়া, মহম্মদবাজারের বৈদ্যনাথপুর, রাসপুরের মতো এলাকাগুলিতে রয়েছে। বর্তমানে কয়েকটি কেন্দ্র সাময়িক বন্ধ, বাকিগুলি চলছে। দুজন পরিদর্শক রয়েছেন ধনঞ্জয় লোহার ও উজ্জ্বল লোহার। চার জন শিক্ষক ও চার জন শিক্ষিকা রয়েছেন বাচ্চাদের পড়ানোর দায়িত্বে। বই, খাতা, স্লেট, পেনসিল-সহ অন্য শিক্ষা সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় পড়ুয়াদের। মিড-ডে-মিলের ব্যবস্থাও আছে। এই সব পড়ুয়া আবার গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বা শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতেও যায় বলে বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা জানিয়েছেন।
রাজনগর কানমোড়া গ্রামের মেয়ে দুখসারি লোহার ২০০৩ সালে মহাশ্বেতা দেবীর চেষ্টায় ও সাহায্যে ঢেকারো সমাজ থেকে প্রথম মাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়ি, ঝাড়খণ্ডের নলা থানার ঘুসরোকাটায় থাকেন। ঢেকারো গোষ্ঠীর কয়েক জন বলছিলেন, ‘‘আমরা তফসিলি জাতি বা জনজাতি, কোনওটাই নই। ফলে, নানা সুযোগ সুবিধা থেকে আমরা সারা জীবন বঞ্চিত।’’ তবে কেউ কেউ জানান, ‘সাবকাস্টযাঁরা লোহার লেখেন তাঁরা এসসি সার্টিফিকেট পেলেও ঢেকারো পদবিযুক্তেরা তা পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন এই দাবি তাঁরা জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন মহলে।
এই বঞ্চিত, অবহেলিত শ্রেণির মানুষদের সার্বিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু সমাজকর্মী। আগামী দিনে আরও অনেক শুভানুধ্যায়ী এই ভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ালে এই জনগোষ্ঠীর বর্তমান করুণ চিত্রটা অবশ্যই বদলাবে।
লিখছেন মহম্মদ সফিউল আলম। আনন্দবাজার পত্রিকায়, ৪ অগস্ট, ২০১৯।

Tuesday, July 30, 2019

যাদবপুরে পাঁচ বছরের আদিবাসী শিশুকে ধর্ষণ করে খুন।


যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত নরেন্দ্রপুরে পাঁচ বছরের আদিবাসী শিশুকে ধর্ষণ করে খুন, প্রমাণ লোপাট করতে মৃতদেহ পোঁতা হল বাগানে।

যাদবপুর লোকসভার অন্তর্ভুক্ত কেয়াদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনঘাটা এলাকায় এক ৫ বছরের আদিবাসী মুন্ডা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠল পড়শি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাট করতে ছোট্ট একরত্তি মেয়েটির মৃতদেহ পাশের বাগানে পুঁতে দেয় অভিযুক্ত আজগর আলি। অভিযুক্ত আজগর আলি কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৫ জুলাই, ২০১৯ থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েটির। ২০ জুলাই খোঁজ মিলল, তবে মৃতদেহের। বাড়ির কাছেই একটি বাগানের মধ্যে পোঁতা ছিল দেহটি। মাটি খুঁড়তেই পচা গন্ধে সকলের হাত নাকে উঠে আসে। গর্ত থেকে পচা-গলা দেহটি বের করে আনে পুলিশ। পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে। ধৃত আজগারকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নরেন্দ্রপুরের উত্তর খেয়াদহে আজগার মোল্লার বাড়ির পাশেই থাকত মেয়েটি। আদিবাসী পরিবারটিতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল আজগারের। আজগার পেশায় ট্রাক চালক। ট্রাক নিয়ে বেরনো না থাকলেই পড়শির বাড়িতে আড্ডা মারতে আসত সে। পড়শির পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে এ দিক ও দিক ঘুরতেও যেত।
১৫ জুলাই সন্ধে থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না পাঁচ বছরের মেয়েটির। আঁধার নেমে এলেও মেয়ে না ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান বাবা-মা। পরের দিন সকালেও মেয়ে ফেরেনি। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে দুপুরে সোনারপুর-বামনঘাটা রোড অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ এলেও উত্তজেনা কমেনি। ইতিমধ্যে পড়শিদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে আজগারের উপর। প্রায়শই বাচ্চাটিকে নিয়ে তাকে ঘুরতে দেখেছে সকলে। আগের দিনও সন্ধের মুখে আজগারের সঙ্গেই মেয়েটিকে শেষ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু আজগারের বাড়ি তালাবন্ধ। এক সময় গ্রামের মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। সকলে মিলে আজগারের বাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশের সামনেই আজগারের টালির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ঘর থেকে সব কিছু বের করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বাচ্চার সন্ধানে এরপর চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। খেয়াদহের পরিত্যক্ত এলাকা, বনবাদাড় বাদ যায়নি কিছুই। নামানো হয় স্নিফার ডগ। বাদ ছিল না ড্রোনও। তাতেও পাঁচ বছরের মেয়েটির কোনও খোঁজ মেলেনি। একই সঙ্গে আজগারেরও খোঁজ চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে শনিবার বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ সোনারপুর স্টেশন চত্বর থেকে আজগারের খোঁজ পায়। লাগাতার জেরায় ভেঙে পড়ে আজগার। খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। সেই সঙ্গে জানায়, খুনের আগে মেয়েটিকে ধর্ষণও করেছিল সে।
পুলিশ জেরায় জানা যায়, ঘটনার দিন বেশ ভালো মতো মদ খেয়ে আজগর আলি পাশের বাড়িতে গিয়েছিল। বাচ্চাটি তাকে দেখে পেয়ারা খাওয়ায় বায়না ধরে। মেয়েটিকে পেয়ারা দেবে বলে দ্রুত কোলে তুলে পাশের বাগানে চলে আসে। সেখানেই আজগারের উন্মত্ত লালসার শিকার হয় মেয়েটি। যন্ত্রণায় ডুকরে কেঁদে ওঠে দুধের শিশুটি। তার কান্নার আওয়াজ চাপতেই মুখ চেপে ধরে আজগার। তাতেই দমবন্ধ হয়ে মারা যায় বাচ্চাটি। উপায় না দেখে বাগানেই বাচ্চাটিকে পুঁতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আজগার। কয়েক দিন শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে ঘোরাঘুরির পর অবশেষে শনিবার রাতে ধরা পড়ে যায়।
সংবাদপত্রের মাধ্যমে এই ঘটনার কথা জানতে পেরে সন্তান হারানো পরিবারের পাশে দাঁড়াতে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন “সিধু কানহু বীরসা স্টুডেন্টস ফ্রন্ট” এর নেতা কর্মীরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে পরিচয় দিয়ে কেয়াদহতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এক ব্যাক্তি রাস্তার ওপর থেকেই মেয়েটির বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিলেন। তবে এই নৃশংস ঘটনা নিয়ে সেই ব্যক্তিটির মধ্যে সেরকম কোন ক্ষোভ বা খারাপ কোন অনুভূতি ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা লক্ষ্য করেননি। বেশ কিছুটা হাঁটার পর মেয়েটির বাড়ি। রাস্তার পাশে একটা এ্যাসবেসটাস দেওয়া দু কামরার বাড়ি। বাড়িতে তালা আটকানো। পাশের এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করতে তিনি বললেন যে ওরা এখানে সেদিনের পর থেকে আর থাকে না। তারা কুমোরপুকুরের দিকে একটি গ্রামে থাকছে। ঠিকানা জেনে ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা সেখানে পৌঁছলেন। গ্রামে ঢুকেই কিছু না বুঝতে পারায় এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেন। সেই ব্যক্তি পারমিশানের কথা জিজ্ঞেস করেন। ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে উনি নিয়ে গেলেন। তার কাছ থেকে জানা যায়, এই গ্রামে সবাই মুন্ডা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস করেন।
মেয়েটির বাড়ি গিয়ে দেখা গেল তিন জন ভদ্রমহিলা আর এক বাচ্চা আছেন। মেয়টির বাবা বা দাদা কেউই ছিলেন না। ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের দেখেই দুই মহিলা জোরে বলে ওঠেন যে “আমারা কিছু বলতে পারবো না, মানা আছে। পার্টিই সব দেখবে বলেছে।” এই বলেই তাদের মধ্যে যিনি বয়স্ক মহিলা ছিলেন তিনি মুখ ঘুরিয়ে কান্না শুরু করে দেন।ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের আাদিবাসী হওয়ার পরিচয় দিয়ে, কথাবার্তা শুরু করতে গেলেও তিনি কিছুই বলতে রাজি হন নি।
ওখান থেকে ফেরার পথে ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা ভাবতে থাকেন যে ওই সর্বহারা আদিবাসী মেয়েটির পরিবার সুবিচার পাবে তো? নাকি দিনের পর দিন তাদের সাথে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে কুশমন্ডির আদিবাসী মেয়েটির মত। কেননা অনেক মানবাধিকার সচেতন সংগঠন এখনো ঘটনাটি নিয়ে তেমন সরব হয়নি। সত্যিই এই সরকার বিচার করবে তো? মেয়েটির পরিবার যেভাবে সন্ত্রস্ত, ভীত তারা কি সত্যিই বিচারের দাবিতে গলা উঁচু করতে পারবে? নাকি অভাবের সংসারে গরীব আদিবাসীদের নিরীহ মেয়েরা এভাবেই একে একে শেষ হয়ে যাবে ?
সংবাদ সৌজন্য – এই সময়, ২২/০৭/২০১৯ ও সিধু কানহু বীরসা স্টুডেন্টস ফ্রন্ট। ছবি - প্রতীকী

Monday, July 29, 2019

খেলার মাঠ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ আদিবাসীরা।


পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেস্বর ব্লকে আদিবাসী অধ্যুষিত মেটেল গ্রামে ফুটবল গ্রাউণ্ড, শেড ও স্টেজ নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে শিল্যান্যাস করা হলেও এখনও নির্মাণ শুরু হল না। শিল্যান্যাস শিলাটি আগাছায় ঢেকে যাচ্ছে। চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন এলাকার আদিবাসীরা।
এলাকার আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এক খেলার মাঠের। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে দাবিটি উপেক্ষিত থাকলেও পালা বদলের পর তৃণমূল সরকারের পক্ষ থেকে একটি ফুটবল গ্রাউণ্ড, শেড ও স্টেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই মত শিল্যান্যাসও করা হয়। মোট বাজেট ধরা হয় ২৩ লক্ষ টাকা। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক সহয়তায় এই ফুটবল গ্রাউণ্ড, শেড ও স্টেজ নির্মাণের কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির। কিন্তু আজ তিন বছর হয়ে গেলেও ফুটবল গ্রাউণ্ড, শেড ও স্টেজ নির্মাণ হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওারির নজরে আনা হলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। 
সংবাদ সৌজন্য - সংবাদ প্রতিদিন, ৩০/০৭/২০১৯।